মুসলমানি শব্দটি বাংলাদেশের একটি বহুল প্রচলিত শব্দ। শিশু অথবা কিশোর বয়সে সকল মুসলিম ছেলেদের ই এই ” মুসলমানির” মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। অনেক শিহু যেমন মুসলমানির কথা শুনলে ভয়ে কাতর হয়, অনেকেই আবার রোমাঞ্চিতও হয়। তবে ভয়ে কাতর শিশুর সংখ্যাই বেশি। কারণ তারা ছুরি, কাঁচি, অপারেশন সুই, সুতা, কাঁটা ছেঁড়া ইত্যাদিতে ভয় পাবে এটাই স্বাভাবিক। আর তখন মুসলমানির সনাতন পদ্ধতিও ছিল বাচ্চাদের ভয় পাওয়ার অন্যতম কারণ। আজকের পোস্টে আমরা মুসলমানি করার পদ্ধতি সম্পর্কেই বিস্তারিত আলোচনা করবো।
মুসলমানি করার পদ্ধতি :
# হাজং দ্বারা মুসলমানি :
২০০০ সাল এর পরবর্তী কিছু সময় পর্যন্ত গ্রামে, গঞ্জে, মফস্বলে মুসলমানির বহুল প্রচলিত ও জনপ্রিয় যে মাধ্যম ছিল তা হলো হাজং বা গোটকার মাধ্যমে মুসলমানি। সেই সময় মুসলমানির সময় অনেক আয়োজন করা হতো। বাড়িতে চলতো ধুন্ধুমার খাওয়ার আয়োজন। আত্নীয়স্বজন ও আশেপাশের প্রতিবেশীদের দাওয়াত করে খাওয়ানো হতো। সময়ের সাথে সাথে অবশ্য এখন মুসলমানির সেই আমেজ অবশ্য অনেকটাই কমে গেছে।
হাজং বা গুটকার মুসলমানি পদ্ধতি ছিলো কিছুটা সনাতন পদ্ধতিতে। তারা রোগীকে অজ্ঞান করতো না এর ফলে অনেক বাচ্চাই কিঞ্চিৎ ব্যথা অনুভব করতো এবং ভয়ে চিৎকার করতো। অনেক পুরাতন হাজং মুসলমানির জন্য বাঁশের কঞ্চি ও ব্যবহার করতো যা অনেক ধারালো থাকতো। তারা মুসলমানির পর নরম পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে ঘা শুকানোর জন্য পাউডার দিয়ে পেঁচিয়ে দিতো।
এই মুসলমানির পরে বাচ্চাদের প্রথম কিছুদিন প্রস্রাবের সমস্যা হতো। প্রস্রাবের সময় ব্যথা অনুভব হওয়া, জ্বালাপোড়া হওয়া ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। আর এই পদ্ধতিতে বাচ্চাদের ঘ শুকানোর জন্য নিয়মিত নেবানল জাতীয় পাউডার ব্যবহার ও ব্যথা নাশক ঔষধ সেবন করতে হতো। সব ঠিক ঠাক থাকলে ১৪- ২১ দিনের মধ্যে ঘ শুকিয়ে লিঙ্গ স্বাভাবিক অবস্থায় ফায়ার আসতো। এসময় তাদের খাবারেও কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করতে হতো কারণ যাদের এলার্জি জাতীয় সমস্যা থাকতো তাদের ঘ শুকাতে বেশি সময় লাগত বা ফুলে যেত।
এই পদ্ধতিতে বেশিরভাগ সময় সফল ভাবে মুসলমানি সম্পন্ন হলেও অনেক অনভিজ্ঞ হাজংয়ের অসতর্কতার জন্য অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত ও হয়েছেন। কারো চামড়া বেশি কাটা হয়ে যেত বা কারো অনেক কম যা মুসলমানির উদ্যেশ্য পুরোপুরি ভাবে সফল করতো না। ফলে পরবর্তী সময়ে তাদের পুনরায় মুসলমানির প্রয়োজন হতো।
# ডাক্তার দ্বারা সাধারণ সার্জারি মাধ্যমে মুসলমানি :
এই পদ্ধতিতে মুসলমানিতে সচেতন পিতামাতা তখন ভরসা করতে পারতো। তাছাড়া যেসব বাচ্চা ভয় পেট বেশি বা বাবামা ও শঙ্কায় থাকতো তারা নিরাপদ থাকার জন্য ডাক্তার এর কাছে গিয়ে সাধারণ সার্জারির মাধ্যমে লিঙ্গের বারোটি অংশ কেটে মুসলমানি সম্পন্ন করতো। এই পদ্ধতি সাধারণ সার্জারি বা অপারেশন এর মতোই। বাচ্চাদের কে এনেস্থেসিয়া বা অজ্ঞান করার ইনজেকশন দিয়ে তার কোমর থেকে নিচের অংশ অবশ করে দেওয়া হতো। এর ফলে বাচ্চা অপারেশন করা নিজের চোখে দেখলেও কোন ব্যাথা অনুভব করতো না। ডাক্তাররা সমস্ত আধুনিক ও ধারালো সার্জারির যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে বিধায় এই পদ্ধতি অনেকটাই নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত।
# আধুনিক মাইক্রো কসমেটিক মুসলমানি :
আমাদের ৩৫ বছরের অভিজ্ঞ ডাক্তার কাজী সাহাব উদ্দিন সাহেবের উদ্ভাবিত এই মাইক্রো কসমেটিক পদ্ধতি সাধারণ সার্জারি থেকেও কয়েক ধাপ উন্নত। উনার কর্মজীবনের শুরুতে নরমাল সার্জারির মাধ্যমে মুসলমানি করে থাকলেও সময়ের সাথে সাথেই তিনি অনুভব করেন মুসলমানিকে আরো সহজ ও সুন্দর করতে হবে। ভয়,ভীতি ও রক্তপাত হীন মুসলমানির পদ্ধতি উদ্ভাবনের নেশায় তিনি গবেষণা শুরু করেন এবং দীর্ঘ গবেষণার পর সফলতা লাভ করেন।
এই মাইক্রো কসমেটিক পদ্ধতিতে মুসলমানিতে বাইরে থেকে বোঝার কোন উপায় নেই যে মুসলমানি হয়েছে। মুসলমানির পর সাথে সাথেই বাচ্চা অথবা যেকোন বয়সের পুরুষ সরাসরি নিজেই হেটে হেটে বাসায় যেতে পারে। প্রাপ্ত বয়স্ক কোন মুসলমান বা অন্য ধর্মের কাউকে যদি কোন রোগের জন্য মুসলমানি করতে হয় তাহলে তারাও প্রথম দিন থেকেই তাদের অফিস, ব্যবসা বা অন্য যেকোন কাজ স্বভাবিক ভাবেই করতে পারে। সেইদিক বিবেচনা করলে এই মুসললমানি সব থেকে বেশি উপকারী প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য।
এককথায় বলতে গেলে ভয়ভীতি, রক্তপাতহীন, ব্যথাহীন, এবং বেড রেস্ট বা অন্য কোন ঝামেলা বিহীন এই মাইক্রো কসমেটিক পদ্ধতি ইতিমিধ্যে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
এই মাইক্রো কসমেটিক মুসলমানি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে জানতে এইখানে ক্লিক করুন। অথবা নিচের ভিডিওটি দেখুন
[su_youtube url=”https://www.youtube.com/watch?v=tr4smPUl3Gc&t=1s”]