52 / 100

“মুসলমানি” মুসলিমদের জন্য একটি অতি পরিচিত জীবন ঘনিষ্ঠ শব্দ। নারী, পুরুষ, ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সকলেই এই শব্দটার সাথে পরিচিত। সকলের পরিচিত হলেও বাচ্চা ছেলেদের কিশোর বয়সের এক আতঙ্কের নাম “মুসলমানি “। বাচ্ছাদের ধারণা মুসলমানি মানেই ব্যাথা, রক্তপাত, ১৫/২০ দিন ঘরবন্ধি সাথে অসহ্য ব্যাথা। হ্যাঁ, আসলেও মুসলমানি মানে তাই, কিন্তু এখন সময় পাল্টেছে। রক্তপাত, ব্যথা ধস্তাধস্তি ত দূরের কথা বাচ্চা কিছু বুঝে উঠার আগেই মাইক্রো কসমেটিক পদ্ধতিতে মুসলমানি সম্পন্ন হয়ে যায়। কি ? বিশ্বাস হচ্ছে না ? নিচের ভিডিওটি মনোযোগ দিয়ে দেখুন – মুসলমানি চলা অবস্থায় বাচ্চা কতো সাবলীলভাবে ডাক্তার সাহেবের সাথে কথা বলছে ! আর বলবেই না বা কেন ? অপারেশন থিয়েটারে যাওয়ার আগে যে দাদুর বয়সী ডাক্তার সাহেব তার ছোট্ট রোগীর সাথে বন্ধুত্ব করে নিয়েছে।

আজকের পোস্টে আমরা জানবো মুসলমানি কেন করা হয় এবং মুসলমানির উপকারিতা সম্পর্কে।

মুসলমানি কেন করা হয় এবং মুসলমানির উপকারিতা :

সলমান এবং মুসলমানি শব্দ ২ টি খুবই পারস্পরিক সম্পর্কিত শব্দ। সাধারণভাবে বুঝা যায় মুসলমান যারা তাদেরকেই মুসলমানি করতে হয়।  ইবরাহীম (আ:) এর শরীয়ত থেকে  ১০ টি সুন্নত আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর শরীয়ত বা দ্বীন ইসলামে প্রবেশ করেছে এর মধ্যে একটি হলো মুসলমানি। মুসলমানদের জন্য মুসলমানি হচ্ছে শেয়ারে ইসলাম বা ইসলামের নিদর্শন। অর্থাৎ প্রত্যেক মুসলমানের জন্য মুসলমানি আবশ্যিক।  যারা জন্মগতভাবে মুসলমান তাদের জন্মের পরেই অথবা শিশু কিশোর থাকা অবস্থায় ই মুসলমানি করে ফেলতে হয়।  এছাড়াও যারা জীবনের যে কোন বয়সে অন্য ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্মে দাখিল হয় তাদের জন্যও মুসলমানি অপরিহার্য।  ইবনে শিহাব যুহরী রাহ. বলেন, কোন ব্যক্তি যখন ইসলাম ধর্ম গ্রহন করত তখন সে বড় হলেও তাকে খৎনা করার আদেশ করা হত। (আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস: ১২৫২)

মুসলমানদের জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম (আ:) এর থেকে সুন্নাতে খতনা বা মুসলমানির শুরু এবং তার পরবর্তী সকল নবী রাসূল নিজেরা মুসলমানি করেছেন এবং তাদের অনুসারীদেরকে মুসলমানির নির্দেশ দিয়েছেন। 

এছাড়াও নানা ধরণের রোগ থেকে বাঁচতে এবং সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য মুসলমানি বা খৎনা করানো হয়ে থাকে। হাজার হাজার বছর ধরে ইসলামে মুসলমানির বিধান চালু থাকলেও বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা  বিজ্ঞান দ্বারাও মুসলমানির অনেক উপকারিতা প্রমাণিত হয়েছে।   

আশা করি মুসললমানি কেন করা হয় তা আপনারা বুঝেছেন। এবার মুসলমানির উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো

মুসলমানির উপকারিতা:

খতনা হল পুরুষের চামড়া অপসারণের একটি অস্ত্রোপচার পদ্ধতি, যা সাধারণত শৈশবকালে করা হয়। ধর্মীয় কারণেই মুসলমান এবং খ্রিস্টান উভয়ের শিশুদের খৎনা করা হয় কারণ খতনা তাদের ধর্মের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে ফাইমোসিসের মতো কিছু রোগের জন্যও এই অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে যা মূত্রনালীর চারপাশে ফুলে যাওয়ার কারণে প্রস্রাব করার সময় ব্যথা সৃষ্টি করে।

মুসলমানি প্রায়ই বিভিন্ন পরিস্থিতিতে করা হয় যেমন একটি শিশুর আগাম চামড়া যখন তার প্যান্টের সাথে আটকে যায় এবং ফুলে যায়, বা যদি কোন শিশুর বারবার মূত্রনালীর সংক্রমণ হয়। যদি এটি বারবার  হয় তবে এটি কিডনি বিকল করে দিতে পারে এবং এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বিভিন্ন সমস্যার জন্য অনেক সময় লিঙ্গের মাথার দিকের চামড়া উল্টে যায়। আর এভাবে উল্টে গেলে চামড়া টাইট হয়ে আটকে যায়। যার ফলে চামড়া আর নাড়াচাড়া করানো যায় না এবং সামনের দিকে বা পিছনের দিকে নেওয়া যায় না। এর ফলে লিঙ্গ ফুলে যায় এবং স্বাভাবিক রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এমন সমস্যা দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ মুসলমানি করানো জরুরি হয়ে যায়।

খৎনার অনেক উপকারিতা রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এটি লিঙ্গ ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে! গবেষণায় দেখা গেছে যে শুধুমাত্র খতনা মুসলিম এবং খ্রিস্টান উভয়ের মধ্যে লিঙ্গ ক্যান্সার সৃষ্টি করে না। এর কারণ হল পুরুষের পুরুষাঙ্গের মাথায় সাদা পদার্থের সৃষ্টি হয় যা স্মেগমা নামে পরিচিত যা ক্যান্সার সৃষ্টি করে।